Buy anything you need. Buy Product!

Search Suggest

অনুচ্ছেদ রচনা : পদ্মা সেতু

অনুচ্ছেদ রচনা : পদ্মা সেতু
2 min read


পদ্মা সেতু
অথবা, স্বপ্নের পদ্মা সেতু




বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু পদ্মা বহুমুখী সেতু। কোনাে রূপ বৈদেশিক সাহায্য ছাড়াই বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত সর্ববৃহৎ প্রকল্প এই স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এটা দেশের বৃহত্তম প্রকল্প এবং এটা দেশের সর্ববৃহৎ সেতু।

পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ৪২টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো তৈরি করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০ মিটার। মুন্সিগঞ্জ জেলার মাওয়া থেকে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা পর্যন্ত সংযুক্ত এই সেতুটি দুই স্তর বিশিষ্ট। এর উপরের স্তরে রয়েছে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি রেলপথ।

পদ্মা বহুমুখী সেতুর সম্পূর্ণ নকশা এইসিওএমের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরামর্শকদের নিয়ে গঠিত একটি দল তৈরি করে। সেতুটি তৈরির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড এর আওতাধীন চায়না মেজর ব্রীজ নামক একটি কোম্পানী।







কাজ শুরু হয় ২৬ নভেম্বর ২০১৪ এবং ২৩ জুন, ২০২২ পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। সেতুটি ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয়। এই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে টোল প্রদান করে প্রথমবারের মত আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুতে আরোহন করেন এবং এর মাধ্যমে সেতুটি উন্মুক্ত করা হয়।




পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযােগে বিশ্বব্যাংক ও দাতাগােষ্ঠী সরে গেলেও বাংলাদেশ সরকার পিছু হটেনি। সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এ সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট খরচ করা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি। বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দেয় সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।

পদ্মা বহুমুখী সেতুর মাওয়া-জাজিরা পয়েন্ট দিয়ে নির্দিষ্ট পথের মাধ্যমে বাংলাদেশের কেন্দ্রের সাথে দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সরাসরি সংযোগ তৈরি হয়। এই সেতুটি অপেক্ষাকৃত অনুন্নত অঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখবে। প্রকল্পটির ফলে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৪৪,০০০ বর্গ কিঃমিঃ (১৭,০০০ বর্গ মাইল) বা বাংলাদেশের মোট এলাকার ২৯% অঞ্চলজুড়ে ৩ কোটিরও অধিক জনগণ প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হবে। ফলে প্রকল্পটি দেশের পরিবহন নেটওয়ার্ক এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। এই সেতুটি নির্মিত হলে বাংলাদেশের জিডিপি ১.২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।

এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নে আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যোগাযোগের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে।





You may like these posts

  • আমার দেখা একটি মেলাসূচনা : মেলা শব্দটি শােনার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনে আনন্দের অনুভূতি সৃষ্টি হয়। আক্ষরিকভাবে মেলা শব্দের অর্থ হলাে ‘মিলন'। মেলায় পরিচিতজনদের সঙ্গে দেখা হয় এবং ভা…
  •  পুষ্প আপনার জন্যে ফোটে নাভাব-সম্প্রসারণ : পরােপকারেই মানবজীবনের সার্থকতা। মানুষের জন্ম হয়েছে অন্যের কল্যাণ সাধনের জন্য। শুধু নিজেকে নিয়ে নিমগ্ন থাকা মনুষ্যত্বের অবমাননার ন…
  • পদ্মা সেতুঅথবা, স্বপ্নের পদ্মা সেতুবাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু পদ্মা বহুমুখী সেতু। কোনাে রূপ বৈদেশিক সাহায্য ছাড়াই বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত সর্ববৃহৎ প্রকল্প এই স্বপ্নের…
  • গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় – কেন হয়, ঔষুধ ও ঘরোয়া প্রতিকারImage: Shutterstockগর্ভাবস্থায় মহিলাদের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া সাধারণ। এটি শরীরের হরমোনের পরিবর্তনের ক…

Post a Comment